প্রকাশিত: ০৪/০২/২০১৭ ৭:০৮ পিএম

নিউজ ডেস্ক::

ভবিষ্যৎ চাহিদার কথা মাথায় রেখেই ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক আরো আধুনিক হচ্ছে। এই লক্ষ্যেই বিদ্যমান এই সড়কটিতে ১৮ কিমি এলিভেটেড ও ১৯৮ কিমি স্পেশাল এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের পরিকল্পনা নেয়া হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশের ব্যস্ততম এই মহাসড়কটিকে যানজটমুক্ত রাখতে হলে আগামীতে এটাকে আট লেনে হয়তো উন্নীত করা যাবে। তবে তাতে জনজট মুক্তির গ্যারাটি থাকছে না। কিন্তু এলিভেটেড ও স্পেশাল এক্সপ্রেসওয়ে যুক্ত করা হলে বিদ্যমান কাঠামোতেই এই মহাসড়কটি ২০২৪ সালের পরও যানবাহনের বাড়তি চাপ সামাল দিতে পারবে।

জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার পর পরই সড়ক বিভাগ ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় কাজ শুরু করে। প্রকল্পের মেয়াদকালের সম্ভাব্যতা নির্ধারণ করা হয়েছে ২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণে ইতিমধ্যে ভূমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। রোডম্যাপ নির্ধারণ করে পিলার দ্বারা সীমানা চিহ্নিত করা হয়েছে।

এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প পরিচালক মাহবুব আলম জানান, থাইল্যান্ডসহ উন্নত বিশ্বের অনেক স্থানে এত দীর্ঘ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে সম্ভব হয়নি। আমরা আপাতত ১৮ কিলোমিটার এলিভেটেড ও ১৯৮ কিলোমিটার স্পেশাল এক্সপ্রেসওয়ের কথাই ভাবছি। তবে এই এক্সপ্রেসওয়ে চলমান ফোরলেন ও অন্যান্য সড়ক থেকে সম্পূর্ণ পৃথক বৈশিষ্ট্যেই নির্মিত হবে।

তিনি বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম উড়াল সড়ক বা এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পে ২১৭ দশমিক ৭০ কিলোমিটার সড়কের উপরে ৬ লেনের এক্সেস কন্ট্রোল্ড হাইওয়ে নির্মাণের মাধ্যমে নিরাপদ ও নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ স্থাপন করার প্রস্তাবনায় রয়েছে, সার্ভিস রোড, মেঘনা ও গোমতী সেতুর উপর বৃহৎ সেতু নির্মাণ, ৭টি ইন্টারচেঞ্জ, তিনটি সার্ভিস স্টেশন, ৬৪টি ওভারপাস, ১১৩টি ভেহিকেল আন্ডারপাস, ৪টি মিডিয়াম সেতু এবং ২৮টি ছোট সেতু।

কয়েকটি সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর এই বিশেষ প্রকল্প এবার অগ্রাধিকার প্রকল্প হিসেবে বিশেষ স্থানে থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।

মাহবুব আলম আরো বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রামের চারলেন সড়কের উপর দিয়েই একটি বিকল্প ভাবনা এটি। কম সময়ে দ্রুত গন্তব্যে যাওয়া যাবে। তিনি বলেন, ২০২৪-২৫ সালে এই মহাসড়কে গাড়ির সংখ্যা দাঁড়াবে ৭০ হাজারে; যা আট লেন সড়ক বাস্তবায়ন করেও নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়। সেজন্য দেশে প্রথমবারের মতো এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের প্রকল্প এগিয়ে নিলে উপকৃত হবে সবাই। এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (এডিবি) সহায়তায় এই প্রকল্পটি সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর বাস্তবায়ন করবে বলে তিনি জানান।

সূত্র জানায়, এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের জন্য এডিবির অর্থায়ন ও কারিগরি সহায়তায় নতুন করে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের প্রধান উদ্দেশ্য হবে, এক্সপ্রেসওয়েটি সমতল মাটির উপর নাকি এলিভেটেড (উড়াল পথ) হবে, তা নির্ধারণ করা।

সেতু মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ঢাকার যাত্রাবাড়ী থেকে চট্টগ্রামের সিটি গেট পর্যন্ত সমতল ভূমির উপর অথবা বিদ্যমান সড়কের উপর দিয়ে উড়াল পথে সড়ক অথবা বর্তমান মহাসড়কের পাশ দিয়েই এটি তৈরি হবে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের দুপাশেই ফোরলেন বাস্তবায়ন করা পর্যন্ত অসংখ্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সরকারি-বেরসরকারি প্রতিষ্ঠানকে সরাতে হয়েছে। সিক্স লেনের উদ্যোগ নিলে আরো অনেক প্রতিষ্ঠান, কৃষি জমি, ঘরবাড়ি, সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন শ্রেণীর প্রতিষ্ঠান সরানোর দীর্ঘ প্রক্রিয়ায় পড়তে হবে। কিন্তু বর্তমান ফোরলেনের উপর দিয়ে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে বাস্তবায়ন করলে এমন সমস্যার মুখোমুখি হতে হবে না। পাশাপাশি মহাসড়কের দুপাশে হাটবাজারগুলোর কারণে সৃষ্ট যানজট এড়ানো যাবে।

ঢাকা থেকে এই এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহার করলে চট্টগ্রামে গিয়ে নামতে হবে। এক্সপ্রেসওয়ের পাশে থাকবে না কোনো ধরনের শপিংমল, জংশন। পুরো সড়কজুড়ে থাকবে বেষ্টনি। ফলে এটি নন মোটরাইজড ভেহিকেল থেকে মুক্ত থাকবে। সড়কজুড়ে থাকবে অত্যাধুনিক নিরাপত্তা ও ই-ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম। প্রতি ঘণ্টায় গাড়ি ১০০ কিলোমিটারের বেশি গতিতে ছুটবে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর ফলে আড়াই থেকে তিন ঘণ্টার মধ্যে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা পৌঁছানো যাবে।

এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট বিভাগ ইতিমধ্যে ভূমি অধিগ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু করেছে। রোডম্যাপ নির্ধারণ করে পিলার দ্বারা সীমানা চিহ্নিত করা হয়েছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এক্সপ্রেসওয়ে ম্যাপের মধ্যে অনেকের বসতভিটা ও কারও কারও জীবিকার একমাত্র উৎস জমিও পড়েছে।

সরকার ইতিমধ্যে ভূমি অধিগ্রহণ নীতিমালা ২০১৬ গ্রহণ করেছে। যাতে দেখা যায়, ভুক্তভোগী ভূমিমালিকদের অধিগ্রহণকৃত ভূমির বিপরীতে বাজার মূল্যের তিন গুণ ক্ষতিপূরণ দেয়ার নিশ্চয়তা দেয়া হয়েছে। এই ব্যবস্থাটি ভূমি অধিগ্রহণে জটিলতা ও প্রতিবন্ধকতা দূর করতে সহায়ক হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার পর পরই সড়ক বিভাগ ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় কাজ শুরু করে। প্রকল্পের মেয়াদকালের সম্ভাব্যতা নির্ধারণ করা হয়েছে ২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত।

পাঠকের মতামত

১০ হাজার বাস রিজার্ভ, জামায়াতের সমাবেশে অংশ নেবে ১০ লাখের বেশি নেতাকর্মী

আগামী ১৯ জুলাই ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতীয় সমাবেশের ডাক দিয়েছে জামায়াতে ইসলামী। এই সমাবেশকে দলের ...

সেভেন সিস্টার্সকে সংযোগকারী ভারত-মিয়ানমারের কালাদান প্রকল্প চালু হবে ২০২৭ সালে

ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও মিয়ানমারের মধ্যে যোগাযোগ বাড়াতে নেওয়া কৌশলগত ‘কালাদান মাল্টিমোডাল ট্রানজিট ট্রান্সপোর্ট প্রকল্প’ ২০২৭ ...